শিক্ষা দিলে গরুও ‘মানুষ’ হয়ে ওঠে। কিংবা অন্তত মানুষের মতোই কিছু আচরণ আয়ত্ত করতে পারে। এমনটাই প্রমাণ করেছেন জার্মানির একদল বিজ্ঞানী।তারা দেখিয়েছেন, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গরুকেও টয়লেট ব্যবহারে অভ্যস্ত করে তোলা যেতে পারে। যেমনটা আস্তে আস্তে শেখে শিশুরা।
বিজ্ঞানীরা ১৬টি গাভী নিয়ে এমন একটি পরীক্ষা চালিয়েছেন। যার মধ্যে ১১টি গাভীই টয়লেট ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। এসব গরু প্রয়োজন হলে দরজা খুলে টয়লেটে যায়। খেতখামারে যেখানে সেখানে মূত্র ও মলত্যাগ করে না।
টয়লেট অপরিষ্কার হয় সেটাও বোঝে। তাই মল-মূত্র ত্যাগের পর পরিষ্কার করার জন্য ‘ফ্ল্যাশ’ টেনে দেয়। এরপর দরজা খুলে বের হয়ে আসে।
এ সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘কারেন্ট বায়োলজি’-তে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটি চালিয়েছে জার্মানির ‘রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ফার্ম অ্যানিমাল বায়োলজি (এফবিএন) ও নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়’।
কৃষি এলাকা বাড়ায় খেতখামারে গবাদি পশুর মলমূত্র থেকে উত্তরোত্তর বাড়ছে বায়ুদূষণের মাত্রা। তাতে তৈরি হচ্ছে অত্যন্ত বিষাক্ত অ্যামোনিয়ার মতো গ্রিনহাউজ গ্যাস।
ফলে বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মতো বিপদ। যা দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত আগস্টেই জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত রিপোর্টও এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। খেতখামারে গবাদি পশুর বর্জ্য পদার্থ থেকে কিভাবে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন কমানো যায় সেই উপায় বাতলানোর কথাও বলেছে।
এই গবেষণার মাধ্যমে সেই বিষয়টার প্রতিই জোর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়া গবেষকরা তাদের গবেষণায় কার্যত সাধারণ মানুষের মধ্যে বহুপ্রচলিত তিনটি ধারণার মর্মমূলে আঘাত করেছেন।
প্রথমত তারা দেখিয়েছেন, মূত্র ও মলত্যাগ করার জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নেয় গবাদি পশু। ব্যাপারটা এমন নয় যে অপেক্ষা করতে না পেরে তারা হঠাৎই মল, মূত্র ত্যাগ করে ফেলে সদ্যোজাত মানবশিশুর মতো।